জাতীয় শোক দিবসের ছুটি বাতিলের আদেশ স্থগিত
- By Jamini Roy --
- 02 December, 2024
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল হাইকোর্টের আদেশে। তবে সোমবার (২ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগ হাইকোর্টের সেই রায় স্থগিত করার আদেশ দিয়েছে। আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এবং এটি সরকারি ছুটি হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল। তবে ২০০৯ সালে হাইকোর্ট এটি ‘ক’ ক্যাটেগরির জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে পালনের নির্দেশ দেয়।
তবে, চলতি বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। ১৩ আগস্ট এই সরকার একটি সিদ্ধান্ত নেয়—১৫ আগস্টের ছুটি বাতিল। প্রধান উপদেষ্টার দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, উপদেষ্টা পরিষদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় স্থগিত করার আদেশ দেয়। পরের দিন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন। আপিল বিভাগ জানায়, জাতীয় শোক দিবসের ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে দাখিল করা আপিল মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় কার্যকর করা যাবে না।
১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালনের পক্ষে আওয়ামী লীগ বরাবরই সোচ্চার। দিনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছুটি বাতিলের প্রজ্ঞাপনকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।
জাতীয় শোক দিবসটি ‘ক’ ক্যাটেগরির জাতীয় দিবস হিসেবে পালনের যে নির্দেশ হাইকোর্ট দিয়েছিল, তা আপাতত স্থগিত হওয়ায় দিনটি নিয়ে বিভাজন স্পষ্ট। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেয়া সিদ্ধান্ত এবং আপিল বিভাগের রায়ের ফলে জাতির পিতার প্রতি জাতীয় পর্যায়ে শ্রদ্ধা জানানোর এই ঐতিহ্য বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
আলোচিত এই রায় দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা সৃষ্টি করেছে। আপিল বিভাগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে দিনটি জাতীয়ভাবে পালনের ভবিষ্যৎ।